বচন কাকে বলে ? বচন পরিবর্তন করার নিয়মসহ জেনে নিন বিস্তারিত

বচনের মাধ্যমে সংখ্যার ধারণা লাভ করা যায়। কোনো রেখা পড়ে ভালোভাবে বুঝার জন্য বচন সম্পর্কে ধারণা থাকা একান্ত প্রয়োজন। বচনকে ইংরেজিতে বলা হয় Number. ইংরেজিতে Number পরিবর্তন করা তুলনামুলক ভাবে সহজ হলেও বাংলায় বচন পরিবর্তন করা সহজ নয়। এ আর্টকেলে বচন কাকে বলে এবং বচন পরিবর্ন করা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

বচন কাকে বলে
বচন কাকে বলে

বচন কাকে বলে

‘বচন' ব্যাকরণের একটি পারিভাষিক শব্দ। বচন অর্থ সংখ্যার ধারণা। ব্যাকরণে বিশেষ্যসর্বনামের সংখ্যাগত ধারণা প্রকাশের উপায়কে বচন বলে ।

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, যার দ্বারা ব্যক্তি, বস্তু, গুণ ইত্যাদির সংখ্যা নির্দেশ করা হয়, অর্থাৎ পদার্থের সংখ্যার বিষয়ে আমাদের বোধ জন্মে তাকে বচন বলে।

বচন কত প্রকার ও কি কি

বচন দুই প্রকার। যথা : ১. একবচন ও ২. বহুবচন ।

১. একবচন কাকে বলে

যে শব্দ দ্বারা কোনো প্রাণী, বস্তু বা ব্যক্তির একটি সংখ্যার ধারণা বোঝায়, তাকে একবচন বলে । যেমন : সে এলো । মেয়েটি স্কুলে যায়।

২. বহুবচন কাকে বলে

যে শব্দ দ্বারা কোনো প্রাণী, বস্তু বা ব্যক্তির একের অধিক অর্থাৎ বহু সংখ্যার ধারণা বোঝায়, তাকে বহুবচন বলে । যেমন : তারা এলো। মেয়েরা স্কুলে যায়।

বচনভেদ : কেবল বিশেষ্য ও সর্বনাম শব্দের বচনভেদ হয়।

এক বচনের ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্য

ক. একবচন প্রকাশের জন্য পৃথক কোনো বিভক্তি নেই, শব্দের মূল রূপটিকে একবচন বোঝায়। সাধারণত এক (এক, একটা, একটি, একখানা) শব্দযোগে একবচন নির্দেশ করা হয়। যেমন : একজন লোক, এক ছাত্র, একটা বই, একটি পাখি, একখানা কলম ইত্যাদি।

খ. একবচনের বিভক্তিযোগে একবচন নির্দেশিত হয়। যেমন : লোককে ।

গ. টি, টা, খানা, খানি ইত্যাদি নির্দেশক প্রত্যয় এক এর সঙ্গে যোগ করে অথবা এক শব্দটিকে ব্যবহার না করেও বিশেষ্যের সঙ্গে টা, টি, খানা, খানি, গাছা, গাছি ইত্যাদি নির্দেশক প্রত্যয়যোগে একবচন গঠন করা যায়। যেমন : একখানা শাড়ি অথবা শাড়িটি। গরুটা পাওয়া যাচ্ছে না। একটি ছেলে অথবা ছেলেটি। তার গলায় ছিল একখানা হার।

বহুবচনের ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্য

বাংলায় বহুবচন প্রকাশের জন্য রা, এরা, গুলো, গুলি, গুলিন, দিগ, দের প্রভৃতি বিভক্তি যুক্ত হয় এবং সব, সকল, সমুদয়, কুল, বৃন্দ, বর্গ, নিচয়, রাশি, রাজি, পাল, দাম, নিকর, মালা, আবলি প্রভৃতি সমষ্টিবোধক শব্দ ব্যবহৃত হয়। সমষ্টিবোধক শব্দগুলোর বেশির ভাগই সংস্কৃত বা তৎসম ভাষা থেকে আগত।

নিম্নে কতিপয় একবচন থেকে বহুবচনের উদাহরণ দেওয়া হলো:

একবচন বহুবচন একবচন বহুবচন একবচন বহুবচন
পুস্তক পুস্তকাবলি কবিতা কবিতাগুচ্ছ সাহেব সাহেবান
কুসুম কুসুমদাম কমল কমলনিকর বালি বালিরাশি
মেঘ মেঘপুঞ্জ পর্বত পর্বতমালা কুসুম কুসুমনিচর
তরঙ্গ তরঙ্গমালা তারকা তারকারাজি বুজুর্গ বুজুর্গান

প্রাণিবাচক ও অপ্রাণিবাচক এবং ইতর প্রাণিবাচক ও উন্নত প্রাণিবাচক শব্দভেদে বিভিন্ন ধরনের বহু বচনবোধক প্রত্যয় ও সমষ্টিবোধক শব্দ যুক্ত হয়। যেমন :

ক. রা- কেবল উন্নত প্রাণিবাচক শব্দের সঙ্গে ‘রা’ বিভক্তির ব্যবহার পাওয়া যায়। যেমন : ছাত্ররা খেলা দেখতে গেছে। তারা সকলেই লেখাপড়া করে। শিক্ষকেরা জ্ঞান দান করেন।

যে ধরনের শব্দে ‘রা' যুক্ত, সে ধরনের শব্দের শেষে কোনো কোনো সময় ‘এরা’ ব্যবহৃত হয়। যেমন : মায়েরা ঝিয়েরা একত্র হয়েছে। সময় সময় কবিতা বা অন্যান্য প্রয়োজনে অপ্রাণী ও ইতর প্রাণিবাচক শব্দেও রা, এরা যুক্ত হয়। যেমন : ‘পাখিরা আকাশে উড়ে দেখিয়া হিংসায় পিপীলিকারা বিধাতার কাছে পাখা চায়।' কাকেরা এক বিরাট সভা করল।

খ. গুলা, গুলি, গুলো প্রাণিবাচক ও অপ্রাণিবাচক শব্দের বহুবচনে যুক্ত হয়। যেমন : অতগুলো কুমড়া দিয়ে কী হবে? আমগুলো টক। টাকাগুলো দিয়ে দাও। ময়ূরগুলো পুচ্ছ নাড়িয়ে নাচছে।

শুধু উন্নত প্রাণিবাচক বহুবচনবোধক শব্দের ব্যবহার

গণ : দেবগণ, নরগণ, জনগণ, বালকগণ, কবিগণ ।

জন : শিক্ষিতজন, সাধুজন, সুধীজন, পণ্ডিতজন, বিদ্বানজন।

বৃন্দ : শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্রবৃন্দ, পণ্ডিতবৃন্দ, সুধীবৃন্দ।

বর্গ : মন্ত্রিবর্গ, ছাত্রবর্গ, পণ্ডিতবর্গ, নেতৃবর্গ, রাজন্যবর্গ ।

মণ্ডলী : অধ্যাপকমণ্ডলী শিক্ষকমণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী, 

মহল : বন্ধুমহল, রাজনৈতিক মহল ।

দের : ছেলেদের, ছাত্রদের, রাজনীতিবিদদের, মন্ত্রিদের, মহিলাদের ৷

সমাজ : ছাত্রসমাজ, শিক্ষকসমাজ, আলেমসমাজ, যুবসমাজ, বিদ্বানসমাজ ৷ কবিকুল, শিক্ষককুল, রমণীকুল, মানবকুল।

লোক : পণ্ডিতলোক, মূর্খলোক (বাংলায় বিশেষ ব্যবহৃত হয় না।)। 

সভা : যুবতীসভা, বিধবাসভা, পণ্ডিতসভা, মন্ত্রিসভা।

সকল : ভাইসকল, লোকসকল।

সমূহ : শিষ্যসমূহ, মুরিদসমূহ, নদীসমূহ।

দল : সেনাদল, যুবদল, শ্রমিকদল, ফুলদল, তারাদল ।

আরো পড়তে পারেন

শুধু অপ্রাণিবাচক শব্দের সঙ্গে ব্যবহৃত বহুবচনবোধক শব্দ

আবলি : দীপাবলি, গ্রন্থাবলি, গুণাবলি, শব্দাবলি, পদাবলি, চরিতাবলি, রত্নাবলি।

নিকর : কুসুমনিকর, রত্ননিকর।

দাম : কুসুমদাম, তৃণদাম, লতাদাম, কুন্তলদাম, বিদ্যুদ্দাম।

মালা : পর্বতমালা, নক্ষত্রমালা, তরঙ্গমালা, মেঘমালা।

রাশি : বালুকারাশি, ধুলিরাশি।

আদি : পুস্তকাদি, কাগজাদি।

গ্রাম : গুণগ্রাম, স্বরগ্রাম ।

মণ্ডল : বায়ুমণ্ডল, মেঘমণ্ডল, নক্ষত্রমণ্ডল।

পুঞ্জ : মেঘপুঞ্জ, গ্রহপুঞ্জ, দ্বীপপুঞ্জ, জাতিপুঞ্জ

গুচ্ছ : পুষ্পগুচ্ছ, ধ্বনিগুচ্ছ, শব্দগুচ্ছ, গল্পগুচ্ছ, কবিতাগুচ্ছ।

নিচয় : পর্বতনিচয়, কুসুমনিচয়, পুষ্পনিচয়।

শ্রেণি : বৃক্ষশ্রেণি, পর্বতশ্রেণি।

যূথ : হস্তীযূথ, মৃগযূথ ৷

মহল : গুণীমহল, মহিলামহল।

সঙ্ঘ : ব্রতীসঙ্ঘ, বিদ্বৎসঙ্ঘ

প্রাণিবাচক ও অপ্রাণিবাচক উভয়ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বহুবচনবোধক শব্দ

সমূহ : পর্বতসমূহ, নদীসমূহ, রাষ্ট্রসমূহ, সড়কসমূহ, দৈত্যসমূহ, জাতিসমূহ ।

সকল : লোকসকল, ভাইসকল, সকললোক ।

সব : ভাইসব, জন্তুসব, পাখিসব, সবজন্তু, সবকথা ।

কুল : কবিকুল, পক্ষীকুল, মাতৃকুল, বৃক্ষকুল

সমুচয় : পক্ষীসমুচয়, পুস্তকসমুচয়।

অপ্রাণিবাচক শব্দে বহুবচনের প্রয়োগ

ব্রজ : ভূধরাব্রজ।

পদের দ্বিরুক্তি দ্বারা বহুবচন গঠিত হয়। যেমন : বাগানটা ফুলে ফুলে ভরে গেছে। জিজ্ঞাসিব জনে জনে ।

আন : সাহেব + আন = সাহেবান, বুজুর্গ + আন = বুজুর্গান ।

আত : কাগজ + আ = কাগজাত (কাগজপত্র)।

বচন পরিবর্তন করার নিয়ম

ক. বিশেষ্য শব্দের একবচনের ব্যবহারেও অনেক সময় বহুবচন বোঝানো হয়। যেমন : সিংহ বনে থাকে (একবচন ও বহুবচন দু-ই বোঝায়)। পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হয় (বহুবচন বাজারে লোক জমেছে (বহুবচন)। বাগানে ফুল ফুটেছে (বহুবচন)।

খ. একবচনাত্মক বিশেষ্যের আগে অজস্র, অনেক, বিস্তর, বহু, নানা, ঢের ইত্যাদি বহুত্ববোধক শব্দ বিশেষণ হিসেবে প্রয়োগ করেও বহুবচন বোঝানো হয়। যেমন: অজস্র লোক, অনে ছাত্র, বিস্তর টাকা, বহু মেহমান, নানা কথা, ঢের খরচ, অঢেল টাকা পয়সা ইত্যাদি।

গ. অনেক সময় বিশেষ্য ও বিশেষণ পদের দ্বিত্ব প্রয়োগেও বহুবচন সাধিত হয়। যেমন: হাঁড়ি হাঁড়ি সন্দেশ। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। বড় বড় মাঠ। লাল লাল ফুল।

ঘ. বিশেষ নিয়মে সাধিত বহুবচন: বহুবাচক সর্বনাম ও বিশেষ্য- মেয়েরা কানাকানি করছে। এটাই করিমদের বাড়ি। রবীন্দ্রনাথরা প্রতিদিন জন্মায় না। সকলে সব জানে না।

> বিশেষ দ্রষ্টব্য : ওপরে বর্ণিত বহুবচনবোধক প্রত্যয় ও সমষ্টিবোধক শব্দের অধিকাংশই তৎসম অর্থাৎ সংস্কৃত এবং সে কারণে অধিকাংশই সাধু রীতি ও সংস্কৃত শব্দে প্রযোজ্য । খাঁটি বা শব্দের বহুবচনে এবং চলিত রীতিতে রা, এরা, গুলা, গুলো, দের- এসব প্রত্যয় এবং অনেক, বহু, সব- এসব শব্দের ব্যবহারই বহুল প্রচলিত।

ঙ. করিম, যতীন, ঢাকা, বনগ্রাম ইত্যাদি সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যের বহুবচন হয় না। কিন্তু একনামে একের বেশি স্থান কিংবা এক ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত অনেক লোক বোঝালে বহুবচন হতে পারে। যেমন : এক ক্লাসে তিন শাহীন পড়ে। এ জেলায় পাঁচটি বনগ্রাম আছে। করিমদের বাড়িতে বেড়াতে যাব। সুনীলরা চলে গেছে।

চ. জাতিবাচক ও সমষ্টিবাচক বিশেষ্যের একবচনেই বহুবচনের অর্থ প্রকাশ পায়। যেমন : গরু উপকারী জন্তু। সমিতি সভায় মিলিত হয়েছে। বাগানে ফুল ফুটেছে।

নোট : জাতিবাচক ও সমষ্টিবাচক বিশেষ্যের সঙ্গে বহুবচনের প্রত্যয়ও যুক্ত হতে পারে। যেমন : মানুষেরা, বাঙালিরা, বালকগুলি, গরুগুলি, ফুলগুলো, সমিতিগুলি, শ্রেণিসমূহ ইত্যাদি।

ছ. সমুদয় বা সব বোঝালে প্রাণিবাচক শব্দে বহুবচনের চিহ্ন কখনো যুক্ত হয়, কখনো হয় না। যেমন : মানুষ (বা মানুষেরা) কথা বলতে পারে। পাখি (পাখিসব) ডিম পাড়ে। পোকা (পোকাসব) ফসল নষ্ট করে।

নোট : কিন্তু অপ্রাণিবাচক শব্দে এক্ষেত্রে বহুবচনের চিহ্ন কখনোই যুক্ত হয় না। যেমন : তেঁতুল খেতে টক লাগে। মেয়েরা ফুল ভালোবাসে। ছাগলে গাছের পাতা খায় ।

জ. বহুবাচক সর্বনাম ও বিশেষ্য বোঝাতে কখনো কখনো বিশেষ নিয়মে বহুবচন সাধিত হয়। যেমন : রবীন্দ্রনাথরা প্রতি বছর জন্মায় না। ছেলেরা কানাকানি করছে। সকলে সব জানে না। এটাই করিমদের বাড়ি।

ঝ. গুণবাচক বিশেষ্যের বহুবচন হয় না। যেমন : জ্ঞান, সততা, উৎকর্ষ, বিনয়, ভদ্রতা, বন্ধুত্ব- এগুলোর বহুবচন হয় না।

ঞ. ভাববাচক বা ক্রিয়াবাচক বিশেষ্যের বহুবচন হয় না। যেমন : গমন, শয়ন, ভোজন, দর্শন ইত্যাদি শব্দের বহুবচন হয় না।

ট. বাংলায় একই সঙ্গে দুবার বহুবচন প্রকাশক প্রত্যয় বা শব্দ ব্যবহৃত হয় না। যেমন :

শুদ্ধ অশুদ্ধ
সকল শিক্ষকবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন। সকল শিক্ষক সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সব মানুষেরাই মরণশীল মানুষেরা মরণশীল

ঠ. পাল ও যূথ শব্দ দুটো কেবল জন্তুর বহুবচন করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন : রাখাল গরুর পাল নিয়ে যায় মাঠে। হস্তিযূথ গ্রামবাসীদের ওপর হামলা করেছে।

ড. দ্রব্যবাচক বা বস্তুবাচক বিশেষ্য সংখ্যা বোঝায় না, পরিমাণ বোঝায়। তাই এদের বহুবচন হয় না । যেমন : জমি, জাল, সোনা, রূপা, লোহা, তামা, দুধ-এগুলো বহুবচন হয় না। কিন্তু কোনো বস্তুবাচক বিশেষ্য সংখ্যা বোঝালে, তার বহুবচন হয়। যেমন : জমিগুলি (অর্থাৎ জমিখণ্ডগুলি) নিলামে বিক্রি হবে।

ঢ. বচনভেদে ক্রিয়ারূপের পরিবর্তন হয় না। যেমন : আমি খাই; আমরা খাই মাঠে চরছে; গরুগুলি মাঠে চরছে।

আমাদের শেষ কথা

আশা করি বচন কাকে বলে ? বচন পরিবর্তন করার নিয়ম জানা তোমার সফলতায়  অবদান রাখবে। তোমার কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমাদেরকে কমেন্টে বা ফেসবুকের জানাতে পারো। পড়াশোনা সম্পর্কে বিভিন্ন আর্টিকেল পেতে আমাদের সঙ্গেই থাক। ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিও। ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। আল্লাহ হাফেজ...

আরো পড়তে পারেন

জুয়েল

আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। শিক্ষা সকলের অধিকার। আসুন আমরা প্রত্যেক শিশুর স্বপ্ন জয়ের সারথি হই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন