আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর pdf

এই আর্টিকেলে আবুল মনসুর আহমেদ রচিত আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইটির রিভিউসহ PDF দেওয়া হয়েছে। আবুল মনসুর আহমেদ ১৮৯৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। এবং ১৯৭৯ সালের ১৮ ই মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি একাধারে ছিলেন সাংবাদিক, রাজনীতিবীদ, সাহিত্যিক। তাঁর সমন্ধে বিস্তারিত জানতে পড়নু আবুল মনসুর আহমদ

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর
আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বই রিভিউ

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর। বিখ্যাত সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। আমার দেখা পঞ্চাশ বছর তার দীর্ঘ জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার ফসল। আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্যিক হিসেবে যেমন খ্যাতিমান তেমনি রাজনৈতিক হিসেবেও তিনি ছিলেন সুপরিচিত, সুবিদিত। তার বিশাল কর্মময় জীবনের একটা বিশাল অংশ কেটেছে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী, শিল্প ও বানিজ্যমন্ত্রী। এছাড়া ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী। তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তান আন্দোলন, বাংলাদেশ আন্দোলন ইত্যাদি।

আবুল মনসুর আহমদ রচিত আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইটির মতো বাংলা সাহিত্যে রাজনীতি সম্পর্কিত এই রকম বই দ্বিতীয়টি আর নেই। আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর সমাজ ও রাষ্ট্র চেনার আয়না। বইটি নতুন প্রজন্মের সামনে একটি জীবন্ত ইতিহাস। এটি শুধু একটি বই নয়, একটি জাতির রাজনৈতিক দলিল।

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইটির লেখক আবুল মনসুর আহমদ আমাদের দেশের তথা কথিত অনেক মহান নেতার মুখোশ উন্মোচন করেছেন। জাতীয় নেতৃবৃন্দের কারণে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে এই জাতি যে দুর্ভোগের শিকার হয়েছে তার জলন্ত প্রমাণ হলো বইটি।

আরো পড়তে পারেন

আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারা রাজনীতির ভেতরের খবর অনকে কিছুই জানি না কিংবা বলা যায় আমাদেরকে জানতে দেওয়া হয় না। আবুল মনসুর আহমদ ছিলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী একই সাথে একজন সাংবাদিক, একজন সাহিত্যিক। তিঁনি আমাদের রাজনীতির অনেক ভেতরের কথাই জানতেন। কথিত অনকে মহান নেতাই ছিলেন তাঁর সহকর্মী। তিনি কাছ থেকে দেখেন এসকল নেতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তাই তিনি ঐসকল মহান নেতাদের অনেক গোপন কথাই প্রকাশ করেছেন তাঁর রচিত আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইয়ে।

আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের কথা ও কাজে বিস্তর ব্যবধান। নির্বাচনের আগে তারা জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দেন নির্বাচিত হয়ে গেলে তারা তা বেমুলাম ভুলে যান বা চেপে যান। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের ইতিহাসের বিভিন্ন সন্ধিক্ষণে তার অজস্র প্রমাণ রয়েছে। এই রকমই একটি জীবন্ত প্রমাণ হলো আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর। বইটি রাজনৈতিক সচেতন পাঠক, গবেষকদের জন্য একটি আকরগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জনগণ ক্ষমতাশীন অত্যাচারি মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্টকে ভোট দিয়ে জয়ী করে। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতার নিজের ব্যক্তি স্বার্থে জনগণের ম্যান্ডেটকে যেভাবে অপব্যবহার ও তামাশার বস্তু বানিয়ে ছেড়েছিলেন তার জীবন্ত স্বাক্ষী হলো আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর।

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর
আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর

এদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সংকীর্ণ মনোভাব, ব্যাক্তি স্বার্থপরতা, দুর্নীতি, অদূরদর্শীতা, অজ্ঞতা ইত্যাদির কারণে আমাদের জাতীয় জীবনে যে বিশাল ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পূরণ হওয়ার যোগ্য নয়। দেশের মুখোশধারী রাজনৈতিক এসব নেতাদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইটিতে।

আজকের কলকাতার ন্যায্য দাবিদার ছিলাম আমরা কিন্তু কী কারণে কলকাতা আমাদের হাতছাড়া হলো কিংবা সংখ্যা অনুপাতে আমরা ভারতের যতটুকু ন্যায্য ভূমির দাবিদার ছিলাম ততটুকু কেন পাইনি, তার বেদনাময় ইতিহাস লেখা আছে এই বইয়ে।

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইয়ে ইতিহাসের এই ধরণের বিভিন্ন অসঙ্গতি এবং জাতির বৃহত স্বার্থের পরিবর্তে রাজনৈতিক নেতারা কীভাবে নিজেদের ব্যাক্তি স্বার্থে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করেছেন তার বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ রয়েছে। শুধু তাই নয় লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই সংবিধান রচনায় ১৯৭২ সালে নেতার জনগণের সাথে যে প্রতারণা করেছে তার বর্ণনাও আমরা পাই আবুল মনসুর আহমদ রচিত আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর বইয়ে। 

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর
আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর

এ সম্পর্কে লেখকের একটি বক্তব্য প্রাণিধানযোগ্য "আমাদের সংবিধান রচয়িতারাও তাই করিয়াছেন। প্রস্তাবনায় তাঁরাও বলিয়াছেন : 'জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্ম-নিরপেক্ষতার মহান আদর্শই আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি-সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল।' তথ্য হিসাবে কথাটা ঠিক না। আওয়ামী লীগের ছয়-দফা ও সর্বদলীয় ছাত্র এ্যাকশন কমিটির এগার দফার দাবিতেই আমাদের মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়। এইসব দফার কোনটিতেই ঐ সব আদর্শের উল্লেখ ছিল না। ঐ দুইটি 'দফা ছাড়া আওয়ামী লীগের একটি মেনিফেস্টো ছিল। তাতেও ওসব আদর্শের উল্লেখ নাই। বরঞ্চ ঐ মেনিফেস্টোতে 'ব্যাংকইনশিওরেন্স পার্ট-ব্যবসা ও ভারি শিল্পকে জাতীয়করণের দাবি ছিল। ঐ 'দফা' মেনিফেস্টো লইয়াই আওয়ামী লীগ ৭০ সালের নির্বাচন লড়িয়াছিল এবং জিতিয়াছিল। এরপর মুক্তি সংগ্রামের আগে বা সময়ে জনগণ, মুক্তি যোদ্ধা ও শহীদদের পক্ষ হইতে আর কোনও 'দফা' বা মেনিফেস্টো বাহির করার দরকার বা অবসর ছিল না। আমাদের সংবিধান রচয়িতারা নিজেরা ঐ মহান আদর্শকে সংবিধানভুক্ত করিবার ইচ্ছা করিয়াছিলেন। তাই জনগণ ও মুক্তি যোদ্ধাদের নামে ঐ ভুল তথ্য পরিবেশন করিয়াছেন।"

আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর pdf

আমাদের শেষ কথা

আশা করি আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর pdf এর মাধ্যমে তুমি সত্যিকারের ইতিহাস জানতে পারবে। তা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন তোমার সফলতায়  অবদান রাখবে। তোমার কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমাদেরকে কমেন্টে বা ফেসবুকের জানাতে পারো। পড়াশোনা সম্পর্কে বিভিন্ন আর্টিকেল পেতে আমাদের সঙ্গেই থাক। ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিও। ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। আল্লাহ হাফেজ...

আরো পড়তে পারেন

জুয়েল

আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। শিক্ষা সকলের অধিকার। আসুন আমরা প্রত্যেক শিশুর স্বপ্ন জয়ের সারথি হই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন